প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৮ ৬:০৪ পিএম

বার্তা পরিবেশক::
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা পৃথিবীর উন্নত বিশ্বে বিশেষভাবে সমাদৃত হলেও সাম্প্রতিক সময়ের রোহিঙ্গা সংকট তাতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। সম্ভাব্য বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ সমন্বয়ের প্রয়োজন বলে মনে করছেন উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সদস্যবৃন্দ। আজ (বুধবার) টেকনাফ উপজেলা মিলনায়তন কেন্দ্রে উপজেলার ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল রুমের উদ্যোগে ঘুর্ণিঝড় বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক কর্মশালা আয়োজিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রবিউল হাসানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব জাফর আহমদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার জনাব প্রণয় চাকমা, ক্যাম্প-ইন-চার্জ মো. আবদুর রহমান, ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন মুক্তাদির, আইএসসিজির ইমার্জেন্সি ইউনিট প্রধান মার্কো বুনো। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা আক্তার মিলি, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আব্দুল্লাহ মনিরসহ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কমিটির সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা ৯১-এর ঘুর্ণিঝড়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে সফলভাবে কিভাবে মোরা-র মোকাবিলা করেছেন তা তুলে ধরেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সাধারণত স্থানীয় জনগণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই পরিকল্পনা করে থাকে। কিন্তু স্থানীয় জনগণের দ্বিগুণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আগমন সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে উভয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ধারাবহিকতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা। কেননা রাখাইন রাজ্যের গণহত্যা ও বর্বরোচিতা নির্যাতনের কারনে যে মানুষেরা জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশে এসেছিলেন তাদের প্রাথমিকভাবে আশ্রয় দিয়েছেন এই স্থানীয় জনগণই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতির যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেই দিকে খেয়াল রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন আলোচকবৃন্দ। একই সঙ্গে বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় উদ্যোগের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্বাগত বক্তব্যে টেকনাফের সহকারী কমিশনার জনাব প্রণয় চাকমা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার প্রতি যতœশীল হয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশিপাশি স্থানীয় মানুষের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইএসসিজি-র ইমার্জেন্সি ইউনিটের প্রধান জনাব মার্কো বলেন- ইতোমধ্যে টেকনাফে ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম শুরু হয়েছে যা উপজেলা নির্বাহী অফিস, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন, বাংলাদেশ আর্মি এবং আইএসসিজি’র সমন্বয়ে গঠিত। দুর্যোগকালীন সময়ে উপজেলার জরুরী সাড়া প্রদানে যা কার্যকর সমন্বয়ে ভূমিকা রাখবে।
দুর্যোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঐতিহসিক অবদান তুলে ধরেন ক্যাপ্টেন মুক্তাদির। বলেন, টেকনাফ উপজেলার যেকোনও প্রয়োজনী পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে সর্বদা প্রস্তুত।
ক্যাম্প-ইন-চার্জদের পক্ষ থেকে জনাব আবদুর রহমান বলেন- প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট যেকোনও ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের সক্ষমতা সর্বত্র প্রশংসিত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন-
ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার এবং বিশেষত দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতিমূলক সকল ধরনের উদ্যোগকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নিতে অনুরোধ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ‘টেকনাফ ঘোষণা’-র মধ্য দিয়ে কর্মশালার সমপ্তি ঘোষণা করেন। ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সক্ষমতা এবং সীমাবদ্ধতাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্ভাব্য করণীয়গুলো এ ঘোষণাপত্রে উঠে আসে। আয়োজনের সামগ্রিক স ালনায় ছিলেন- আইএসসিজি-র ইমার্জেন্সি কোঅর্ডিনেটর অফিসার জনাব তাহের খান।

পাঠকের মতামত